ভদ্র ছেলেরা লাইফের শুরুতে অনেক প্রশংসা পায়। তাই তারা ধরেই নেয় যে এই প্রশংসা পাওয়ার মতোই মনে হয় তারা তাদের লাইফের গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে সাপোর্টও পাবে। কিন্তু লাইফের একটা নির্দিষ্ট বয়সে গিয়ে তাদের এই ভুল বিশ্বাস ভেঙে যায় এবং তারা বুঝতে পারে যে, জীবনে ভদ্র ছেলে হয়ে শুধু প্রশংসাই পাওয়া যায়, কোনো সাপোর্ট পাওয়া যায় না; অধিকন্তু যখন ভদ্র ছেলেরা অন্যের কাছে প্রশংসা পেয়ে মানুষকে বিশ্বাস করে থাকে এই সরল বিশ্বাসের সুযোগ নিয়ে আশেপাশের লোকজন তাদেরকে ঠকিয়ে থাকে এবং তারা ভদ্র ছেলে হওয়ায় একটি কাল্পনিক ভুল বিশ্বাসের কারণে তারা এই ঠকানোর প্রতিবাদ করে না; আর এটাই হয় তাদের আত্নশক্তি ও নিজস্ব সত্তার ভাঙনের শুরু। যেহেতু তারা লাইফের শুরুতে প্রশংসা পেয়েছে তাই তারা ভেবেই বসে যে আমাকে অল্প একটু ঠকালেও সকলে আমার পাশে আছে আর আমি এক্ষেত্রে ছাড় দিয়ে চুপ থাকলে আমাকে আরও বেশি ভালোবাসবে এবং দুর্দিনে আমার পাশে থাকবে। কিন্তু লাইফের ক্লান্তিকালে এসে তারা বুঝতে পারে যে, ভালো-ভদ্র ছেলে হয়ে লাইফে প্রশংসাই শুধু পাওয়া যায় সাপোর্ট জিনিসটা পাওয়া যায় না অর্থাৎ অধিকার আদায় করে নিতে হয়, অধিকার কেউ কাউকে দেয় না। তাই এই ভুল বিশ্বাস থেকে যখন কোনো ভদ্র থেকে যথাসময়ে বেরিয়ে আসতে পারবে তখন থেকেই সে তার লাইফের আত্মপ্রতিষ্ঠার বীজ বপন করে ফেলবে এবং লাইফে সফল হতে সক্ষম হবে।
আর যারা এটা বুঝেও সাহসের অভাবে কিছু করতে পারবে না তারা জেনে রাখো যে ভদ্র ছেলেদের জীবন অনেক কষ্টময়, অবহেলাপূর্ণ, দুর্গতিময় ও বিড়ম্বনায়ময় হয়; কারণ সবাই তাদের নিয়ে খেলে থাকে; তাদেরকে ভালো কেউ বাসে না।
আসলে এই 'ভালোবাসা' শব্দটাই হচ্ছে একটা ধোঁকা এবং জীবনের গতি থামিয়ে দেওয়ার একটি ভ্রান্ত ধারণা। জগতে ভালোবাসা বলে কিছু নেই। এই জগতের প্রতিটি মানুষ তিনটি জিনিসের চর্চা করে তা হলো— স্বার্থবাদ, সুবিধাবাদ এবং কর্তৃত্ববাদ। এই জিনিসটা ভদ্র ছেলেরা অনেক দেরিতে বুঝতে পারে। ততদিনে তাদের লাইফ থেকে মূল্যবান অনেক কিছু হারিয়ে যায়।
এভাবে ভদ্র ছেলেদের জীবনটা অনেক রূঢ়, শুষ্ক ও ধুসর-বিবর্ণ হয়ে থাকে। হুমায়ূন আহমেদের একটা উক্তি আছে— "ভদ্র ছেলেদের জন্য মেয়েদের অন্তরে কখনও ভালোবাসা জন্মায় না, যেটা জন্মে সেটা হলো সহানুভূতি"; মেয়েদের অন্তরে তো তাও সহানুভূতি জন্মে, অন্যান্য মানুষদের অন্তরে সেটাও জন্মে না।
© লেখক : মেহেদী হাসান।
বই : আই ডোন্ট কেয়ার (লেখা চলছে)।
গিভ অ্যান্ড টেক | A book of self development
মুখবন্ধ
•••••••••
মাতৃস্নেহ অতুলনীয়, বাবার মতো বন্ধু কেউ নেই, পরিবার সবচেয়ে বড় আস্থার জায়গা হেন তেন— এইসব কথাবার্তা হলো ভুয়া এবং অতিরঞ্জিত কথাবার্তা। এই পৃথিবীতে কেউ কারো নয়, সবাই স্বার্থবাদী এবং সুবিধাবাদী— এই সত্যটা যে যত দ্রুত বুঝতে পারবে তার জন্য ততই মঙ্গল। এই পৃথিবীর সবাই চলে 'গিফ অ্যান্ড টেক' পলিসিতে; সবাই তোমার কাছে কিছু জিনিস প্রত্যাশা করে, আর সেই প্রত্যাশা নিয়েই তোমার উপর ইনভেস্ট করে। তুমি যদি সময়মতো সেই প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারো তাহলেই বুঝবে তোমার প্রতি ইনভেস্ট করাটা ভালোবাসার দান ছিল নাকি প্রত্যাশার ইনভেস্ট ছিল। তুমি প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হলে তোমাকে দোষারোপ করা হবে; তুমি কী কারণে পারো নাই তা কেউ বুঝতে চাইবে না; ভুল বোঝার জন্য অনেকে থাকে, কিন্তু পরিস্থিতি বোঝার জন্য কেউ থাকে না। নিজের একান্ত দুর্দিনে কাউকেই পাশে পাওয়া যায় না। বাবা-মা, অমুক মামা, অমুক খালু, অমুক আঙ্কেল, অমুক ভাই-তমুক ভাই, অমুক বন্ধু-তমুক বন্ধু কাউকেই তখন পাশে পাওয়া যায় না।
প্রায় প্রত্যেকের জীবনেই একটা সংকটময় সময় থাকে। তোমার জীবনে সেই দুঃসময়টা যেদিন আসবে সেদিন থেকে তুমি পরিপূর্ণ ও সক্ষম মানুষ হতে শিখবে, সেদিন তুমি বুঝবে যে তুমি আসলে কে? অমুকের ছেলে বা মেয়ে, অমুকের ভাতিজা, অমুকের ভাই, অমুকের বন্ধু, ব্লা ব্লা— এসব কোনোটাই কাজে আসে না। তুমি আসলেই একা এবং তোমার নিজের পথ তোমাকে একাই গড়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে নিজের জ্ঞানবুদ্ধি, সাহস ও কর্মসক্ষমতাই একমাত্র সহায়ক হিসেবে কাজে আসে।
দেখা যায় ভদ্র ছেলেদের লাইফ অনেক কষ্টের হয়, কারণ তারা এই সত্যটা অনেক দেরিতে বুঝতে পারে। শৈশবে দুষ্টু থাকা ছেলেগুলো অল্প বয়সে ভুল করে ও এর দ্বারা বুঝে যায় তার কাছের মানুষগুলো আসলেই তার কতটা কাছের এবং সেই মাফিক লাইফ সাজিয়ে নিতে পারে। কিন্তু ভদ্র ছেলেগুলো এই বাস্তবতা অনুধাবন করতে শেখে অনেক দেরিতে।
এন্টিবায়োটিকের ডোজ কম্পিলিট না করলে দুর্বল হয়ে থেকে বেঁচে যাওয়া ভাইরাস ব্যাক্টেরিয়া যেমন পরিস্থিতি বুঝে নিজেদের গঠন চেঞ্জ করে ফেলে নিজেকে সেই পরিস্থিতিতে টিকে থাকার উপযোগী করে গড়ে তোলে, এই বইটি পড়লে সেইসব পরিস্থিতিতে থাকা তরুণরা যারা এখনও জানে না ভবিষ্যতে তাদের সাথে কী ঘটতে চলেছে সেইসব ছেলেমেয়েরাও নিজেদের প্রকৃত অবস্থা অনুধাবন করতে শিখবে ও নিজেকে সেই পরিস্থিতিতে টিকে থাকার জন্য সেইভাবে গড়ে তুলতে সক্ষম হবে।
তাই এরূপ বিভিন্ন কনজারভেটিভ ফ্যামিলির সন্তানদের লাইফের বিভিন্ন পরিস্থিতি গবেষণা করে তা থেকে উত্তরণের সম্ভাব্য পন্থা ও পদ্ধতি নিয়ে এই বইটি লেখা হয়েছে। বইটি সে সকল ছেলেমেয়েদের উপকারে এলে আমাদের এই পরিশ্রম ও প্রয়াস সার্থক হবে।
বইটি প্রি-অর্ডার করতে বইটির প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান 'টাইম পাবলিকেশন্স' এর ফেসবুক পেজের মেসেজ ইনবক্সে মেসেজ করুন। সম্পূর্ণ বই লেখা হলেই আমরা আপনাকে রিপ্লাই দিবো।
টাইম পাবলিকেশন্স এর ফেসবুক পেজে যেতে এখানে—ক্লিক—করুন।
টাইম পাবলিকেশন্স | A Publication of Life Academy
No comments:
Post a Comment